Bengal Liberty: লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা এবং ষষ্ঠ তফসিলের দাবিকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ। আর এর জেরে বুধবার রক্তক্ষয়ী আকার নিল আন্দোলন। সহিংস এই মুভমেন্টে অন্ততপক্ষে ৪ জনের মৃত্যু খবর মিলছে। প্রায় ৪৫ জন আহত। যাঁদের মধ্যে ২২ জন পুলিশকর্মীও রয়েছেন।
লেহ-তে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং রাস্তায় পুলিশ-আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের মাঝেই পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুক তাঁর ১৫ দিনের অনশন ভেঙে দিলেন। বিক্ষোভকারীরা বিজেপির কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। একাধিক গাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে খবর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি এবং কাঁদানে নিক্ষেপ করে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনসমাবেশ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি হয়েছে। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা এবং কাউন্সিলর ফুনসোগ স্তানজিন সেপাগকে গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) অনশন মঞ্চে উসকানিমূলক বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কেন এই বিক্ষোভ? (Ladakh)
লাদাখ এপেক্স বডি (LAB)-এর যুব শাখা এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। আন্দোলনে যোগ দেওয়া ১৫ জনের মধ্যে দু’জন— সেরিং আংচুক (৭২) ও তাশি দোলমা (৬০) টানা ৩৫ দিনের অনশনের পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হন। সেটাই সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে জানিয়েছেন সোনম ওয়াংচুক।
অনশনকারীরা কেন্দ্রের কাছে ৪ দফা দাবি জানাচ্ছেন—
১. লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা প্রদান
২. সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল প্রয়োগ
৩. লেহ ও কারগিলের জন্য আলাদা লোকসভা আসন
৪. চাকরিতে সংরক্ষণ
ওয়াংচুকের বক্তব্য, লাদাখের তরুণরা চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েই হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন। এখানে গণতন্ত্র নেই এবং জনগণকে দেওয়া ষষ্ঠ তফসিলের প্রতিশ্রুতিও পূরণ হয়নি।
আগামী ৬ অক্টোবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA) এবং লাদাখের প্রতিনিধিদের মধ্যে নতুন দফায় বৈঠক হওয়ার কথা। এই আলোচনায় লাদাখ এপেক্স বডি (LAB) এবং কারগিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (KDA)-এর সদস্যরা যোগ দেবেন। গত ৪ বছর ধরে এই দুই সংগঠন যৌথভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছে এবং একাধিকবার কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করেছে।
সোনম ওয়াংচুকের প্রতিক্রিয়া
ওয়াংচুক বলেন, “আমি লাদাখের যুব সমাজকে অনুরোধ করছি, দয়া করে হিংসায় যাবেন না। এতে আমাদের আন্দোলনের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হবে না। আমরা লাদাখ বা দেশের অন্দরে অস্থিতিশী পরিস্থিতি চাই না।এটি লাদাখের জন্য এবং আমার ব্যক্তিগত জীবনের জন্যও সবচেয়ে দুঃখের দিন। গত পাঁচ বছর ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ পথে হাঁটছিলাম। পাঁচবার অনশন করেছি, লেহ থেকে দিল্লি পর্যন্ত পদযাত্রা করেছি। কিন্তু আজ সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ দেখে মনে হচ্ছে আমাদের শান্তির বার্তা ব্যর্থ হল।”
ওয়াংচুক প্রশাসনকে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ বন্ধ করার অনুরোধ জানান। তাঁর ঘোষণা, “আমরা অবিলম্বে এই অনশন শেষ করছি। যদি আমাদের যুবকরা প্রাণ হারান, তবে অনশনের লক্ষ্য পূরণ হয় না। ঠান্ডা মাথায় সংলাপ চালিয়ে যাওয়াই এখন জরুরি। আমরা আন্দোলনকে অহিংস রাখব এবং সরকারকেও বলব আমাদের শান্তির বার্তা শুনতে। শান্তির বার্তা যখন উপেক্ষা করা হয়, তখনই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।”
লাদাখে অশান্তির ঘটনায় সোনম ওয়াংচুককে দায়ী করল কেন্দ্র
বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার এই অশান্তির জন্য সরাসরি দায়ী করল জলবায়ু আন্দোলনের মুখ সোনম ওয়াংচুককে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ওয়াংচুকের “উসকানিমূলক বক্তব্য”ই পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তোলে। তাঁর অনশন ও পরপর কয়েকটি বক্তৃতার জেরে বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। উত্তেজিত জনতা বিজেপি এবং সরকারি দফতরে হামলা চালায়। অগ্নিসংযোগ করা হয়। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরও আক্রমণ চালায়। এতে ৩০ জনেরও বেশি পুলিশ, সিআরপিএফ গুরুতর জখম হয়েছেন।
কেন্দ্রের অভিযোগ, আন্দোলনের সাংবিধানিক দাবি ঢেকে গেল সহিংসতায়? এর মূল প্ররোচক হিসেবে উঠে এসেছে সোনম ওয়াংচুকের নাম।
More Stories
আগামীকাল এসআইআর নিয়ে বড় বৈঠক (SIR Update)
গুরুতর জখম খগেন মুর্মু, স্বতঃপ্রণোদিত তদন্তে নামল ন্যাশনাল কমিশন ফর শিডিউল ট্রাইবস (national commission for scheduled tribes)
চোখের নীচের হাড়ে গুরুতর চোট খগেন মুর্মুর, অস্ত্রোপচারের সম্ভবনা (khagen murmu)